প্রতিষ্ঠাতা: মুজাহিদে আযম হযরত মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.

জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ, ঢাকা-এর মুখপত্র

প্রতিষ্ঠাকালঃ ১৯৩৭ ঈসায়ী

তাফসীরুল কুরআনিল কারীম

তাফসীরুল কুরআনিল কারীম

মাওলানা মুতীউর রহমান


اِنَّ عِـدَّةَ الشُّهُوۡرِ عِـنۡدَ اللهِ اثۡنَا عَشَرَ شَهۡرًا فِيۡ كِتَابِ اللهِ يَـوۡمَ خَلَقَ السَّمٰوَاتِ وَالۡاَرۡضَ مِنۡـهَا اَرۡبَعَةٌ حُرُمٌ

অনুবাদ : নিশ্চয় আল্লাহর নিকট আল্লাহর কিতাবে মাসের সংখ্যা ১২টি (ঐদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান—যমীন সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। সূরা তাওবা : ৩৬

 

তাফসীর : উপরিউক্ত আয়াতে জাহেলী যুগের একটি কুসংস্কার রহিত করা হয়েছে। চান্দ্র ১২ মাসের মধ্যে চারটি মাসের অথার্ৎ যিলকদ, যিলহজ, মুহাররম ও রজবের বিশেষ সম্মান করা হতো সর্ব যুগে এবং সর্ব ধর্মেই। এসব মাসে যুদ্ধ—বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল। মক্কার মুশরেকরাও এসব মাসের পবিত্রতা রক্ষা করত। কিন্তু তারা যেহেতু যুদ্ধ—বিগ্রহে অভ্যস্ত ছিল তাই তারা নানা ছল বাহানা করে এসব মাসকে আগে পরে করে নিত যাতে যুদ্ধ করতে পারে। যেমন, মুহাররম এলে তারা বলত, এ বছর সফর মাস আগে এসে গেছে মুহাররম মাস পরে আসবে। তাদের এ কুপ্রথা ও কুসংস্কার রহিত করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা বলছেন যে, তোমাদের নিজেদের পছন্দ মতো আগে পরে করে নিলে মাস তার নিজস্ব অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবে না। মাসের সংখ্যা ও অবস্থান ঐটিই যা আল্লাহর নিকট সুনির্দিষ্ট। আর তা আজ থেকে নয় বরং আসমান—যমীনের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই অথার্ৎ আদিকাল থেকেই। সুতরাং তোমাদের আগপিছ করাতে কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। যেহেতু চান্দ্রমাসের সাথে ইবাদত—বন্দেগীর সম্পর্ক রয়েছে, এ আগপিছ করার কারণে শরীয়তের বহু কাজ—কর্ম ও বিধি—বিধানে জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা ছিল। তাই কঠোরভাবে এর নিন্দা করা হয়েছে। মুশরেকদের এ আচরণের কারণে চান্দ্রমাসসমূহের সঠিক আনুপূর্ব বিনষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলার কুদরতে বিদায় হজের বছর মাসগুলো প্রকৃত অবস্থায় এবং আপন আপন অবস্থানে ফিরে আসে। ঐ বছরের যিলহজ মাসটি প্রকৃত যিলহজ মাসই ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনার খুতবায় বলেছিলেন, জেনে রাখ, আজ যমানা ও কাল তার আপন অবস্থায় ফিরে এসেছে, যা আসমান—যমীন সৃষ্টির সময় ছিল।

মুহাররম চান্দ্রবর্ষের প্রথম মাস। ইসলামে বর্ষবরণ বলতে কিছু নেই। কিন্তু যেহেতু চান্দ্রমাসের সাথে ইবাদত—বন্দেগীর ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে তাই চান্দ্রমাসের হিসাব রাখা ফরযে কেফায়া। অথার্ৎ সবার ওপর ফরয তবে কিছু লোক যদি এ হিসাব রাখে তাহলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে মুহাররম মাসের ফযীলত ও মাহাত্ম্যের কথা বর্ণিত হয়েছে। মুসলিম শরীফের এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর দরবারে আমার আশা যে, তিনি আশুরার রোযার বদৌলতে বিগত এক বছরের গোনাহ মাফ করে দিবেন।

 

আশুরার রোযা রাখার নিয়ম

১০ তারিখের রোযার সাথে তার পূর্বের দিন অর্থাৎ ৯ তারিখের রোযাও রাখা মুস্তাহাব। কোনো কারণ বশত ৯ তারিখে রোযা রাখতে না পারলে ১০ তারিখের সাথে ১১ তারিখের রোযা রেখে নিবে।

লেখক সম্পর্কে
মাওলানা মুতীউর রহমান
Avatar

মাওলানা মুতীউর রহমান

একটি কমেন্ট করুন