সময়ের লিপি
ইবনে মাইন
২৯.১.২০২২
আমার ১৮, তোমার কেন ২১?—প্রথম আলো
** মজার প্রশ্ন। একটি বাস্তব প্রশ্ন। চারদিকে যেখানে সম—অধিকারের খেলা, সেখানে বিয়েতে ছেলে—মেয়ের বয়সে এ বৈষম্য থাকবে কেন? নারীবাদীরা অবশ্য বলবেন—নারীদের অধীনস্থ করে রাখতেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ছেলেদের বিয়ের বয়স বেশি করা হয়েছে। কিন্তু পাল্টা প্রশ্নও তো হয়—নারীরা যেখানে ১৮ বছরেই বিয়ে ও সংসারের সাধ পেতে পারে, পুরুষেরা কিংবা ছেলেরা কেন ২১ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? ২১ বছরের কম বয়সের ছেলে বিয়ে করলে কেন তা বাল্যবিবাহ হবে এবং ছেলের জন্যে কেন তা অপরাধ হবে?
আসলে এসব যুক্তিবাদী ও সম—অধিকারবাদীরা নিজেদের কমন সেন্সটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন কি না—কে জানে? নারী—পুরুষের শারীরিক সক্ষমতা যে এক নয়—তা কি তাদের জানা নেই? বিয়েতে মেয়েরা কমবয়সি হয় ছেলেদের তুলনায়—এ তো মানবসৃষ্ট কোনো বৈষম্য নয়, বরং এটা নারী—পুরুষের স্বভাবজাত ও সৃষ্টিগত পার্থক্যেরই একটি প্রকাশ। সমতা তারা আর কত ক্ষেত্রে দাবি করবে!
২.২.২০২২
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাতমাদো এত নৃশংস কেন?—বিডিনিউজ২৪.কম
** ক্ষমতায় এক বছর পূর্ণ করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তারা ক্ষমতা দখল করেছিল। এর মধ্যে, বিবিসির অনুসন্ধান অনুযায়ী দেড় হাজারের বেশি মানুষকে তারা হত্যা করেছে। এর মধ্যে শিশু—কিশোরেরাও রয়েছে। এই যে তাদের এতটা নৃশংসতা, বিবিসিতে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, কিন্তু মোড়ল রাষ্ট্রগুলো এ নিয়ে কথা বলছে না কেন? গত আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে এসেছে তালেবান। কিন্তু তারা নারীদের ‘অধিকার’ ক্ষুণ্ণ করতে পারে—এমন কল্পিত এক আশঙ্কার ধুয়ো তুলে কাঁপিয়ে তুলছে চারপাশ। অথচ মিয়ানমারের এ সেনাদের বিরুদ্ধে তাদের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এ বৈষম্য কেন? তালেবানরা মুসলমান বলে? আচরণে তো এমনই মনে হয়।
৪.২.২০২২
সন্তানরা সবাই উচ্চস্তরে, আমরা একা—নিঃস্ব—যুগান্তর
** সংবাদের এ শিরোনামটি বৃদ্ধাশ্রমের এক অসহায় বাবার আর্তনাদ। তিনি বলেছেন : তিনি মরে গেলেও ছেলেদের জন্যে বদদুআ করবেন না। আবার তিনি আত্মহত্যাও করতে পারছেন না ছেলের সুখের ও মানসম্মানের কথা চিন্তা করে। কারণ, আত্মহত্যা করলে সবাই ছেলেকে ধিক্কার দেবে, পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হবে। যে বাবা এভাবে ছেলের সুখের কথা চিন্তা করতে পারেন, তার সঙ্গে আপন ছেলের এমন আচরণ, তাকে বৃদ্ধাশ্রমে ফেলে রাখা সত্যিই বড় নিষ্ঠুর। এ নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি পেতে হলে সন্তানের মন—মানসে দ্বীনি চেতনা ও দ্বীনি শিক্ষার বীজ বপন করার বিকল্প নেই।
৯.২.২০২২
দেওবন্দ কেন বিজেপির টার্গেট—প্রথম আলো
** কেন? দেওবন্দ ভারতের মুসলমানদের অধিকারের কথা বলে, দেওবন্দ পুরো উপমহাদেশের অধিকাংশ মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব করে, দেওবন্দ বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা করে। বিজেপি যখন ভারতজুড়ে হিন্দু জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, গেরুয়া পতাকাকে ভারতের জাতীয় পতাকা বানাতে চায়, তো দেওবন্দ বিজেপির টার্গেট হবেই। দেওবন্দ তো সেই প্রতিষ্ঠান, যার সূর্যসন্তানেরা এ উপমহাদেশকে ইংরেজমুক্ত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এ তো সেই প্রতিষ্ঠান, ভারতের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখন বিজেপি যখন আকারে—ইঙ্গিতে দেওবন্দের গায়ে সন্ত্রাসের তকমা লাগাতে চাইছে, তো একে কোন ভাষায় ব্যক্ত করব! যারা দেশের স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করল, জীবন দিল এবং স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করল, তারাই এখন নিজ দেশে হয়ে গেল সন্ত্রাসী! হিন্দু জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে দিতে চাইলে বিজেপির সামনে এ ছাড়া তেমন পথও নেই। দেওবন্দ তাই বিজেপির টার্গেট হতেই পারে।
১৩.২.২০২২
আফগানিস্তানের জব্দ তহবিল অন্যদের জন্যে ব্যবহার মানে চুরি, দাবি আফগান শুভাকাক্সক্ষীদের—প্রথম আলো
** যাক, কথাটা কেউ কেউ অবশেষে বলল। এক দেশের জনগণের টাকা আরেক দেশের জনগণকে দিয়ে দেয়া হবে—এ আধুনিক পৃথিবীতে এমন খোলামেলা চুরির কথাও কি ভাবা যায়! আসল কথা কী, এ আমেরিকা তো পুরো আফগানিস্তানটাকেই ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। হামলা যতটুকু করা তাদের পক্ষে সম্ভব, তারা সবটাই করেছে। যত মানুষ তারা পেরেছে, হত্যা করেছে। অবশেষে পরাজিত হয়ে ফিরে গেছে। তো যেখানে হাজারে হাজারে মানুষ খুন করতে পারে, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করতে পারে, সেখানে অল্প কিছু টাকা আত্মসাৎ করা তো বলার মতো কোনো বিষয়ই নয়!